ঘন কুয়াশা আর সূর্যের লুকোচুরিতে উত্তরের জেলা ঠাকুরগাঁওয়ে বেড়েছে শীতের তীব্রতা। প্রচণ্ড শীতের কারণে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। শীতের প্রকোপে অসহায় হয়ে দিনপার করছে ছিন্নমূল মানুষেরা। গত দুইদিন ধরে বাতাসে শীতের তীব্রতা অনেক বেশি। রাতের বেলা বৃষ্টির মতো ঝিরঝির করে কুয়াশা পরছে।
জানুয়ানির শুরু থেকেই শীতের তীব্রতা শুরু হয়েছে। কয়েকদিন ধরেই ঘণ কুয়াশায়, দেখা মিলছেনা সূর্যের। তীব্র শীত ও ঘণ কুয়াশায় কাপছে যনজীবন। এতে বেশি প্রভাব পরেছে নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া মানুষ।
দেশের উত্তর জনপদের সর্বশেষ জেলা পঞ্চগড় ও ঠাকুরগাঁও। হিমালয়ের অনেক কাছে হওয়ায় এখানে শীতের তীব্রতা প্রতি বছরই বেশি হয়। কিন্তু এবার যেন শীত একটু বেশিই দাপুটে।
জানতে চাইলে মাঠে কাজ করা শহিদুল ইসলাম বলেন, তীব্র ঠান্ডায় কাজ করতে পারছিনা। কুয়াশার কারণে কিছুই দেখা যায় না। সূর্যেরো তো দেখা নাই কয়েকদিন ধরে। ঠান্ডায় হাত পা ককড়া হয়ে আসে।
মোটরসাইকেল নিয়ে বাজারে যাওয়া আবুল হাসান বলেন, এখন বেলা দশটা বাজে এখনো ঘণ কুয়াশা ছারেনি। কুয়াশার কারনে কিছু দেখা যায়না। হেডলাইট জালিয়ে অমনেই কষ্ট করে কনোরকমে বাজারে যাচ্ছি।
প্রতি বছর শীত মৌসুমে বিপাকে পড়ে এই অঞ্চলের নিম্ন আয়ের মানুষেরা। এবারো প্রচণ্ড শীতে সাধারণ মানুষ কাজে যেতে পারছে না। শ্রমিক শ্রেণির এসব মানুষ পরিবার নিয়ে অর্ধাহারে দিনপার করছে। অপর দিকে অতিরিক্ত শীতের কারণে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে শিশুসহ বিভিন্ন বয়সের মানুষেরা।
ঠাকুরগাঁও ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালেও বারছে রোগীর সংখ্যা , শীতের তীব্রতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শিশু রোগীর সংখ্যাও বাড়ছে। ৪৫ শয্যার শিশু ওয়ার্ডে প্রতিদিন দুই শতাধিক শিশু চিকিৎসাধীন থাকছে। এমন অবস্থায় শিশুদের গরম পোশাকের ব্যবহার বাড়ানোসহ বাড়তি যত্ন নেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন শিশু বিশেষজ্ঞরা।
রোগী ও স্বজনরা জানান, শীতের প্রকোপ বাড়ার সঙ্গে বেড়েছে শীতজনিত বিভিন্ন রোগ। অনেক বাবা-মা জ্বর, সর্দি-কাশি, শ্বাসকষ্ট, নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়াসহ শীতজনিত নানা রোগে আক্রান্ত শিশুদের নিয়ে হাসপাতালে এসেছেন। এছাড়া নানা বয়সী মানুষ শীতজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
সিনিয়র কনসালটেন্ট (শিশু বিশেষজ্ঞ)-ডা. সাজ্জাত হায়দার শহিন বলেন, শীতকালে বিশেষ করে শিশু ও নবজাতকের ঠিকমতো যত্ন না নেওয়ার ফলে সর্দি-কাশি, নিউমোনিয়া, ডায়রিয়ায়সহ নানা ধরনের সমস্যা হয়ে থাকে। তাই শীতে গরম পোশাকের ব্যবহার বাড়ানোসহ শিশুদের বাড়তি যত্ন নেওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।
তিনি আরোও বলেন, এই এলাকায় প্রচণ্ড শীত হওয়ায় শিশু রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। আমাদের এখানে শিশু ওয়ার্ডে বেডের সংখ্যা ৪৫ জনের হলেও এখন প্রতিদিন দুই শতাধিক শিশু চিকিৎসাধীন থাকছে। তাদের মধ্যে সর্দি-কাশি, নিউমোনিয়া, ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেশি।