Dainik Sotter Kontho - দৈনিক সত্যের কণ্ঠ
ঢাকাThursday , 15 June 2023
  • অন্যান্য
আজকের সর্বশেষ সবখবর

কেমন আছেন আত্রাই হরিজন সম্প্রদায়ের মানুষ

Google News

ব্রিটিশ আমলের রেলী ব্রার্দাসের পরিতাক্ত দুটি খুপরি ঘরে বাস করে কয়েকটি পরিবার । জায়গার অভাবে একসঙ্গেও ঘুমাতে পারেন না অনেকে । পালা ক্রমে একেক সময় একেকজনকে ঘুমাতে হয় । ঘরের ভেতর পর্দা করে কক্ষ বানাতে হয় । আর এই কক্ষে গাদাগাদি আর ঠাসাঠাসির জীবন, সেখানেই আবার রান্নার চুলা । সব মিলিয়ে এক অসহনীয় জীবন যাপন করছে নওগাঁর আত্রাই উপজেলার রেলী ব্রার্দাস বটতলীর হরিজন সম্প্রদায়ের বাসিন্দারা । তাদের কেউঝাড়ুদার, কেউ পরিচ্ছন্নতাকমী ।

 

অন্য সব মানুষের মতো তাদের জীবনেও আছে সুখ- দুঃখ, ব্যাথা- বেদনা, আছে চাওয়া- পাওয়া, প্রতিদিন ভোরে ঘর থেকে বের হয়ে ঝাড়ু, বেলচা আর ছেচাট ট্রলি হাতে, অথচ উপজেলার হরিজন জনগোষ্ঠীর নারীরা বঞ্চিত শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও আইনি সুবিধা থেকে । বার‌্যবিবাহ, মাতৃত্বকালীন জটিলতা, মাতৃমৃত্যু, পারিবারিক সহিংসতা, ধষণসহ নানা সহিংসতার মুখোমুখি হতে হয় তাদেররকে । জন্মের পর থেকে মুখোমুখি হতে হয় নানা বৈষম্যের । । রেলী ব্রার্দাসের বচতলী হরিজন এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, একটি বাড়ির সামনে কাপড়ের ছড়াছড়ি । কাপড় দেখলেই বুঝা য়ায়, ওই এলাককায় কতো লোকের বসবাস । গত তিন প্রজন্ম ধরেই একই ঘরে একই সাথে বসবাস করে আসছেন বেটি চম্পা রানী । তিনি জানান, একটা ঘরে আমাগো থাকতে হয় । এর মধ্যে একটা রুম, গাদাগাদি করে থাকি । এর মধ্যে বড় বড় পোলাপানও আছে ।

 

গৃহিনী—— জানান, আমরা কধনো এক সাথে ঘুমাতে পারি না । একসাথে ঘুমানোর জায়গা নাই । আমরা মহিলারা রাতে ঘুমাই আর পুরুষরা সকালে ঘুমায় ।

ঝাড়ুদার——রানী জানান, আমি যখন ঘুমাই আমার ছেলে বইয়া থাকে, আর ছেলে যখন মুগায় আমি বইয়া থাকি । ছোট বাসাা জায়গা পাইনা । কি করবো । আমাগেতো দেখার কেউ নাই । বিএ পড়াশোনা সাধনা রানী চৌধুরী্ । তিনি জানান কাপড়ড় দিয়ে ঘরের মধ্যে ঘর বানাতেত হয় আমাদের । এভাবেই আমরা রাত্রি যাপন করি । ঠিকভাবে পড়াশোনা করতে পারি না । এদিকে ঘরে জায়গা না থাকার পরেও জায়গা করে দিতে নয় নববধুকে । এজন্য পরিবারের অন্য সদস্যদের ঘুমাতে হয় ঘরের বাহিরে । মাধব বাঁসফোর বলেন, বড় ছেলেকে বিয়ে দিয়েছি কিছুদিন হলো, কিন্তু রুমতো একটাই । তাই মধ্যে পর্দা করে দেই । না হয় আমি আর আমার বউ মিলে বাইরে শুয়ে থাকি ।

রেলী ব্রার্দাসের বটতলী হরিজন কলোনীর সভাপতি সুধির বলেন, আমরা পরিবার নিয়ে কিছুদিদন আগে রাজশাহী চিড়িয়াখানায় গিয়েছিলাম । তখন আমার মনে হয়েছে আমাদের হরিজন সম্প্রদায়ের মানুষের থেকে ওই চিড়িয়াখানার জানোয়াররাও ভালোভাবে বসবাস করে । আমাদের এই এলাকা ভেঙ্গে নাকি সরকার বাহাদুর মিনি ষ্টেডিয়াম করা হবে । আমরা এর প্রতিবাদ জানাচ্ছি । আর একটা বিষয় হচ্ছে, যদি কখনো এখানে আগুন লাগে, আমরা যে ঘরে থেকে বের হবো এইসুযোগটাওনাই । বাংলাদেশে বতমানে সাড়ে পাঁচ থেকে ছয় মিলিয়নের মতো দলিতদের সংখ্যা । বাঙালি দলিত বলতে সমাজে যারা অস্পৃশ্য তাদের বোঝায়, যেমন কমকার, মালাকার, কামাড়, কুমার, জেলে, পাটনী, কায়পুত্র, কৈবত, ক্ষোরকার মাহাতো রাজবংশী কমকার প্রভূতি । এসব সম্প্রদায় আবার বিভিন্ন গোত্রে বিভক্ত । এবিষয়ে উপজেলার আহসান গঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ মন্হুরুল আলম বলেন, রেলী ব্রার্দাসের বটতলী হরিজন কলোনীতে আবাসনের তুলনায় তাদের সংখ্যা অনেক বেশি যা তাদের জন্য বসবাসের মতো ঘরবাড়ি নাই । আর সরকার প্রতি উপজেলায় একটি করে মিনি ষ্টেডিয়াম তৈরির প্রস্তাবনা আছে । যদি হরিজন কলোনীর রেলী ব্রাদারে পরিতাক্ত ওঅবৈধ ভাবে গড়ে উঠা বাড়িঘর উচেছদ করার পর মিনি স্টেডিয়াম করা হয় তবে হরিজন কলোনীর বসবাসকারীদের অন্যস্থানে বাসস্থান তৈরি করে দেয়া হভে । তবে আমার ইউনিয়ন পরিষদ থেকে হরিজনদেরর সকল সুযোগ সুবিধা দেয়া হয় ।