Dainik Sotter Kontho- দৈনিক সত্যের কণ্ঠ
Dainik Sotter Kontho - দৈনিক সত্যের কণ্ঠ
ঢাকাMonday , 11 March 2024
  • অন্যান্য

অবৈধ ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার, রুগীদের ভোগান্তির শেষ নেই

কিশোরগঞ্জ সদর হাসপাতালের ছবি

কিশোরগঞ্জে দিনের পর দিন রোগীরা বিভিন্ন ক্লিনিক ও রোগ নির্ণয়কেন্দ্রে (ডায়াগনস্টিক সেন্টার) স্বাস্থ্যসেবা নিতে গিয়ে প্রতারণার শিকার হচ্ছেন সাধারন রোগীরা । সেবার মান নিয়ে সাধারন রোগীদের অভিযোগ দীর্ঘদিনের৷ সরকারী হাসপাতালের সামনেই নিয়মবহির্ভূতভাবে চলছে ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলো৷

সম্প্রতি সরেজমিনে জেলা শহরসহ বিভিন্ন উপজেলা ঘুরে দেখা গেছে, প্রতিটি সরকারি হাসপাতালের সামনে, পেছনে এবং আশ পাশেই গড়ে উঠেছে ডায়াগনষ্টিক সেন্টার ও ক্লিনিক। বিশেষ করে কিশোরগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল ও শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের একেবারেই নিকটে বিধিবহির্ভূতভাবে ক্লিনিক ডায়াগনষ্টিক সেন্টার গড়ে উঠেছে৷

 

তথ্য মতে জানা গেছে, কিশোরগঞ্জ জেলায় ১৭৮টি ডায়াগনস্টিক সেন্টার রয়েছে; যার মধ্যে লাইসেন্স নেই ১০টির। বন্ধ আছে দুটি। এছাড়াও জেলায় ৫১টি বেসরকারি হাসপাতাল এবং ক্লিনিক রয়েছে ৷যার মধ্যে তিনটি হাসপাতাল ও ক্লিনিকের লাইসেন্স নেই। যেসব প্রতিষ্ঠান নিবন্ধনের জন্য আবেদন করেছে তারাও খুলে বসেছেন ক্লিনিক৷

 

এই বিষয়েস্থানীয় বাসিন্দা ও বেশ কয়েকজন রোগীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তালিকায় থাকা বেশির ভাগ বৈধ ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নেই প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশ৷

কিশোরগঞ্জ সিভিল সার্জেন সাইফুল ইসলামের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, কিশোরগঞ্জ জেলাতে যেসব ক্লিনিক ও ডায়াগনষ্টিক রয়েছে তা সরকারী নিয়ম অনুসারে অবকাঠামো নির্মাণ করা হয়নি। তারপরও এসব প্রতিষ্ঠান স্বাস্থ্য বিভাগের নিবন্ধন পেয়েছে, নবায়নও হচ্ছে৷তিনি আরও জানান সম্প্রতি জেলা শহরের স্টেশন রোডে অবস্থিত মেঘনা ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও যমুনা ডায়াগনস্টিক এবং কনসালটেশন সেন্টারে মেয়াদোত্তীর্ণ রিএজেন্ট দিয়ে রোগ নির্ণয় পরীক্ষার দায়ে দুটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারকে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। ওই দুই ডায়াগনস্টিক সেন্টারে অভিযান পরিচালনার সময় মেয়াদোত্তীর্ণ রিএজেন্ট পাওয়া যায়।

 

এদিকে গত বছর অস্ত্রোপচারের সময় ভুল চিকিৎসায় রুপালী আক্তার (২২) নামের এক প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগে বন্ধ করে দেওয়া আল-হেরা ডিজিটাল ডায়াগনষ্টিক সেন্টার অ্যান্ড হসপিটালটি যা আবারও চালু হয়েছে।

 

কিশোরগঞ্জ সদর ও সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল হাসপাতালের কিছু রোগী সাথে কথা বললে তারা জানান, ব্যাঙের ছাতার মতো ডায়াগনস্টিক সেন্টার চলছে কিশোরগঞ্জ হাসপাতালের আশপাশে।

 

এই বিষয়ে সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সাথে কথা বললে তারা বলেন প্রতি ক্লিনিক বা ডায়াগনস্টিক সেন্টারের দৃশ্যমান স্থানে সরকারি যে নীতিমালা বড় করে টানিয়ে রাখা বাধ্যতামূলক করা।

কিশোরগঞ্জ সোসাইটি অব হেলথ সার্ভিসের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. কামরুজ্জামান খুকু বলেন, ‘স্বাস্থ্যসেবার মানবৃদ্ধি এবং সরকারি নীতিমাল অনুযায়ী পরিচালনা করতে গত ২৬
আজকের পত্রি ওয়ারি আমাদের সংঘঠনের সভায় ফেব্রুয়ারি হাসপাতাল এবং ক্লিনিকমালিকদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

 

এই বিষয়ে কিশোরগঞ্জের ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক হৃদয় রঞ্জন বণিক বলেন, ‘ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী স্বাস্থ্যসেবা খাতে সেবাগ্রহীতাদের প্রতিকার দেওয়ার এখতিয়ার খুবই সীমিত।’

কিশোরগঞ্জের সিভিল সার্জন সাইফুল ইসলাম জানান’আমরা মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার জন্য কাজ করে যাচ্ছি এবং এ ব্যাপারে দৃঢ়প্রতিজ্ঞাবদ্ধ জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসনকে নিয়েই আমরা একসঙ্গে কাজ করে যাচ্ছি; যাতে মানুষকে মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবা দেওয় যায়। আমাদের সবার জন্য স্বাস্থ সুরক্ষানীতি বাস্তবায়ন করতে হবে।’

এই বিষয়ে কিশোরগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘আমরা এর আগেও বিভিন্ন ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও ক্লিনিকে অভিযান পরিচালনা করেছি এটি একটি নিয়মিত প্রক্রিয়া।’