নড়াইলে ভ্যানচালক দেলোয়ার ওরফে দেলবার গাজী কে হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত মূল আসামী দেলোয়ার গাজীর আপন ছোট ভাই ইকরামুল গাজী( ৩৮) কে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ।
বুধবার( ২১ জুন) রাতে সদর উপজেলার বিছালি ইউনিয়নের মধুরগাতি এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয় । সে উপজেলার মধুরগাতী গ্রামের মৃত শুকুর আলী গাজীর ছেলে ও নিহতের আপন ছোট ভাই ।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ইকরামুল গাজীর স্ত্রীর সাথে নিহত দেলোয়ার গাজীর স্ত্রীর মাঝে সাংসারিক ছোটখাটো বিষয় নিয়ে ঝগড়া বিবাদ হয় । বিষয়টি আসামীর স্ত্রী তাকে জানালে আসামী ইকরামুল গাজী বিষয়টির প্রতিকার চেয়ে তার বড় ভাই দেলোয়ার গাজীকে জানায় ।
একাধিকবার জানানোর পরেও তিনি এ বিষয়ে কোনো গুরুত্ব না দেওয়ায় ইকরামুলের স্ত্রী রাগ করে তার বাবার বাড়িতে চলে যায় । ঘটনার সমাধান না হলে ইকরামুলের স্ত্রী আর স্বামীর বাড়ি আসবে না বলে আল্টিমেটাম দেয় । এ জন্যে ইকরামুল তার সহযোগী বন্ধু মিলে তার ভাই দেলোয়ার ওরফে দেলবার গাজীকে সায়েস্তা করার পরিকল্পনা করে ।
পরে( ২৯ মে) রাতে দেলোয়ার ওরফে দেলবার গাজীকে ইকরামুলের বন্ধু কৌশলে ডেকে নিয়ে যায় । এ সময় ইকরামুল ও তার অপর সহযোগী একত্রে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী দেলোয়ার কে ভ্যানে চড়ে আটঘরা গ্রাম থেকে নাউসোনা মহাশ্মশানগামী রাস্তা দিয়ে আসতে থাকে । পথিমধ্যে নূর মোহাম্মদ বিশ্বাসের মৎস্য ঘেরের নিকট আসলে ইকরামুল গাজীর বন্ধু তার গামছা দিয়ে পিছন থেকে দেলোয়ার গাজীর গলায় পেঁচিয়ে ধরে । তখন সে ইকরামুলকে গামছা ধরে টান দিতে বলে । দুই জনে দুই পাশ থেকে গামছা টেনে শ্বাসরোধ করে তার মৃত্যু নিশ্চিত করে । ঘটনার মোড় ঘুরিয়ে দেওয়ার জন্য এবং পুলিশের চোখ ফাকি দেয়ার জন্য পার্শ্ববর্তী জেলা যশোরের অভয়নগর থানাধীন বুনোরামনগর এলাকায় তার ভ্যানটি রেখে আসামিরা পালিয়ে যায় ।
এ বিষয়ে নড়াইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা( ওসি) মাহামুদুর রহমান বলেন, বৃহস্পতিবার বিকেলে আসামি ইকরামুল গাজী ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারা মোতাবেক হত্যাকাণ্ডে তার সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছেন ।
উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার( ৩০ মে) সকাল সাড়ে ৮ টার দিকে নড়াইল সদর উপজেলার বিছালী ইউনিয়নের খলিশাখালী আটঘরা শ্মশান এর কাছ থেকে ভ্যানচালক দেলবার গাজীর( ৫৮) লাশ উদ্ধার করে পুলিশ । এর আগে ২৯ মে তিনি নিখোজ হন । এ ঘটনায়( ৩১ মে) নিহতের সেজ ভাই গাজী মনিরুল ইসলাম বাদি হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে নড়াইল সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন ।