Dainik Sotter Kontho - দৈনিক সত্যের কণ্ঠ
ঢাকাSunday , 4 June 2023
  • অন্যান্য
আজকের সর্বশেষ সবখবর

তিন মাস ২৮ দিনেও উদঘাটন হয়নি শেফালী হত্যার রহস্য

ছবিঃ নড়াইলের লোহাগড়া থানা

Google News

নড়াইলের লোহাগড়ায় চাঞ্চল্যকর শেফালী হত্যার রহস্য ৩ মাস ২৮ দিনেও উদঘাটন করতে পারেনি থানা পুলিশ । এ নিয়ে নিহতের পরিবারসহ স্থানীয়দের মাঝে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে । ইতিমধ্যে মামলার বাদি মেহেদী হাসান মামলাটি পিবিআইকে দিয়ে তদন্ত করানোর জন্য বাংলাদেশ পুলিশের আইজিপি বরাবর আবেদন করেছেন ।

 

মামলা ও নিহতের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, গত ৫ ফেব্রুয়ারি দিবাগত গভীর রাতে দর্বৃত্তের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে নিজ গৃহে খুন হয় শেফালী বেগম( ৪৫) ।

 

নিহত শেফালী বেগম নড়াইল জেলার লোহাগড়া উপজেলার জয়পুর ইউনিয়নের গোবিন্দপুর গ্রামের আলিম শেখের স্ত্রী । এ ঘটনায় নিহতের ছেলে মেহেদী হাসান বাদি হয়ে ৬ ফেব্রæয়ারী অজ্ঞাত নামা আসামী উল্লেখ করে লোহাগড়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন ।

কথা হয় মামলার বাদি মেহেদী হাসানের সাথে, তিনি কান্না জড়িত কন্ঠে গণমাধ্যমকর্মীদের জানান, চাচাত ভাই মো. আরিফুজ্জামান আকাশের মোবাইল ফোনে সংবাদ পেয়ে ঘটনার দিন বাড়িতে আসি । ঘরে ঢুকে দেখতে পাই মায়ের গলায় ধারালো অস্ত্রের আঘাতে গলার সামনের শাসনালীসহ অর্ধেক অংশে গভীর ক্ষত হয়েছে । এসময় মায়ের শরীরের পরিধেয় পোশাক সাভাবিক ছিল ।

কেন মামলার তদন্ত পিবিআইতে স্থানান্তর করতে চান এমন প্রশ্নের জবাবে মামলার বাদি মেহেদী হাসান বলেন, “ দীর্ঘ প্রায় চার মাস অতিবাহিত হতে যাচ্ছে, কিন্ত লোহাগড়া থানা পুলিশ এই হত্যার সাথে জড়িত কাউকে এখনও গ্রেফতার করতে পারেনি । তাই মামলার তদন্ত পিবিআইতে হস্তান্তর করার জন্য বাংলাদেশ পুলিশের আইজিপি মহোদয় এবং নড়াইল পুলিশ সুপার বরাবর লিখিত আবেদন করেছি ।

 

এ সময় অসহায় মায়ের নৃশংস হত্যার ন্যায় বিচার পাবার জন্য প্রশাসনের উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপ কামনা করেন নিহতের ছেলে মেহেদী হাসান ।

এ বিষয়ে নিহতের স্বামী আলীম শেখ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমার স্ত্রী বা আমাদের সাথে অত্র অঞ্চলের তেমন কারো কোন শত্রæতা নেই । তবে হত্যা কান্ডের কয়েক মাস পূর্বে ছোট ভাই আবেদ শেখের স্ত্রী পারুল বেগম ও একই বংশের চাচাত ভাই ওবায়দুর শেখের কিছু আপত্তিকর দৃশ্য আমি এবং আমার স্ত্রী দেখে ফেলি । পরিবারের সম্মানের দিকে তাকিয়ে বিষয়টি আমরা গোপন রেখেছিলাম । আমার ধারনা উক্ত বিষয়কে কেন্দ্র করে এই হত্যাকান্ড ঘটতে পারে । তবে আপত্তিকর সম্পর্কের বিষয় পারুল বেগম ও ওবায়দুর শেখ অস্বীকার করে বলেন, আমাদের মাঝে খারাপ কোন সম্পর্ক কোনদিন ছিলনা ।

 

উল্লেখ্য ওবায়দুর একই গ্রামের ছরোয়ার শেখের ছেলে । আলীম শেখ আরও বলেন, কিছু দিন আগেও মায়ের সম্পত্তি বিক্রিয় নিয়ে আমার স্ত্রীকে আবেদ ও তার পরিবার নানা রকম ভয়ভীতি প্রদর্শন করে আসছিল ।

একই বসত ভিটায় রাতের আধারে হত্যার শিকার হন শেফালী বেগম । ৬ ফেব্রæয়ারী বেলা কত ঘটিকার সময় খুনের বিষয় জানতে পারেন, এমন প্রশ্নের জবাবে নিহত শেফালী বেগমের দেবর আবেদ শেখ ও তার স্ত্রী পারুল বেগম বলেন, আমরা বেলা অনুমান ১১ঘটিকার সময় কোন কোন সাড়া- শব্দ না পেয়ে শেফালী বেগমরে ঘরে প্রবেশ করি । এ সময় ঘরে প্রবেশের তিনটি দরজার মধ্যে দুইটি দরজা ভেতর থেকে বন্ধ ছিল এবং একটি দরজা বাইরের দিক থেকে বন্ধ করা ছিল । ঘরে ঢুকে দেখি শেফালী বেগমের গলা কাটা নিথর দেহ রক্তাক্ত অবস্থায় খাটে পড়ে ছিল । আমাদের চিৎকারে প্রতিবেশিরা ছুটে আসে । পরে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনা স্থল পরিদর্শন করে ।
লোহাগড়া থানার অফিসার ইনচার্জ মো. নাসির উদ্দিন বলেন, এই মামলার প্রকৃত রহস্য উদঘাটনের জন্য আমরা সবরকম চেষ্টা অব্যাহত রেখেছি । আশা করছি খুব শিঘ্রই প্রকৃত খুনি সনাক্ত করে আইনের আওতায় আনতে পারব ।