ধর্মান্তরিত হয়ে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছিলেন কণ্ঠশিল্পী মনি কিশোর। মেয়ে নিন্তিকে বলে গিয়েছিলেন, মৃত্যুর পর তার মরদেহ ইসলাম ধর্মমতে দাফন করতে। কিন্তু গায়কের ধর্মান্তরিত হওয়ার কোনো কাগজপত্র পাওয়া না যাওয়ায় মরদেহ সৎকার নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়েছে। ফলে দুই দিন ধরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পড়ে আছে গায়কের দেহ।
এর আগে মনি কিশোরের ভাই শোক কুমার বলেছিলেন, ‘নিন্তি জানিয়েছে তার বাবাকে যেন দাফন করা হয়। এমনটাই নাকি ওর বাবা ওকে বলে গিয়েছিল। যেহেতু মেয়েকে বলে গিয়েছে, তাই তার ইচ্ছায় দাফন করা হবে।’কিন্তু নিন্তি দেশে না থাকায় এবং ধর্মান্তরের কোনো প্রমাণ না পাওয়ায় জটিলতা তৈরি হয়।
গত শনিবার রামপুরার একটি ভাড়া বাসা থেকে উদ্ধার করা হয় মনি কিশোরের মরদেহ। সেসময় উদ্ধার কাজে নিয়োজিত ছিলেন রামপুরা থানার উপপরিদর্শক খান আবদুর রহমান। তিনি সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘আপাতত শিল্পীর মরদেহ মর্গে থাকবে। শিল্পীর মেয়ে দেশে ফিরলেই তার সিদ্ধান্তে যা হওয়ার হবে। অথবা দূতাবাসের মাধ্যমে কোনো চিঠি পাঠিয়ে যদি কাউকে দায়িত্ব দেন, তখনই আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে সুবিধা হতো। তা ছাড়া তিনি যে ধর্মান্তরিত হয়ে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছেন, এ রকম প্রমাণাদি আমাদের সরবরাহ করতে পারলেও হয়। মনি কিশোর সাহেবের মেয়ে নিন্তি চৌধুরীর সঙ্গে আমাদের ওসি তদন্ত স্যারের কথা হয়েছে।’
ওসি তদন্ত শাহাদাত হোসেন সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘নিন্তি চৌধুরী আমাদের কাছে একটা তথ্য হোয়াটসঅ্যাপে পাঠিয়েছেন। আমরা তাকে পরামর্শ দিয়েছি, ওখানকার দূতাবাস অথবা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে যেন পাঠান। এদিকে মেয়েও আমাদের জানিয়েছেন, তার বাবাকে আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলামের মাধ্যমে দাফন করতে। অন্যদিকে পরিবার, ভাই–বোনেরা চেয়েছিলেন হিন্দুধর্মমতে মরদেহের আনুষ্ঠানিকতা সারতে। দুই পক্ষ থেকে দুই ধরনের বক্তব্যের কারণে একটা বিতর্ক ও জটিলতা তৈরি হতে পারে। এই বিতর্ক ও জটিলতার অবসানে আমরা শিল্পী মনি কিশোরের মেয়ে নিন্তি চৌধুরীকে উপস্থিত মরদেহ গ্রহণ নইলে প্রয়োজনীয় তথ্য সরবরাহের অনুরোধ করেছি। এরপরই আমরা সিদ্ধান্ত নিতে পারব।’
৯০ দশকে ‘কি ছিলে আমার’ গানটি দিয়ে তুমুল জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিলেন মনি কিশোর। এই এক গানেই গোটা দেশজুড়ে পরিচিত এনে দিয়েছিল তাকে। গানটি পরে কে অপরাধী সিনেমাতেও ব্যবহার করা হয়।
এছাড়া মনি কিশোরের গানের মধ্যে ‘সেই দুটি চোখ কোথায় তোমার’, ‘তুমি শুধু আমারই জন্য’, ‘মুখে বলো ভালোবাসি’, ‘আমি মরে গেলে জানি তুমি’ উল্লেখযোগ্য।
কণ্ঠ দেওয়ার পাশাপাশি গানের কথা লিখতেন, সুরও করতেন মনি কিশোর। তার জনপ্রিয় গান ‘কি ছিলে আমার’ তারই লেখা ও সুর করা। ২০টির মতো গান লিখেছেন ও সুর করেছেন জনপ্রিয় এই কণ্ঠশিল্পী।
Leave a Reply