1. mdsabbirzamader7@gmail.com : admin :
অনুদানের টাকাও ফেরত নিচ্ছে ভারত - Dainik Sotter Kontho- দৈনিক সত্যের কণ্ঠ

অনুদানের টাকাও ফেরত নিচ্ছে ভারত

ডেক্স রিপোর্ট
    Update Time : Wednesday, January 15, 2025
  • 5 Time View
বাংলাদেশের ব্রাক্ষণবাড়িয়া থেকে আগরতলা পর্যন্ত রেলপথে যোগাযোগ বাড়াতে ট্রানজিট হিসেবে বেছে নেওয়া হয় বাংলাদেশকে। ভারতের স্বার্থে বাংলাদেশের বুক চিরে তৈরি হয় আখাউড়া-আগরতলা ডুয়েলগেজ রেলপথ। প্রকল্পের কাজ এরই মধ্যে শেষ হয়েছে, কাজ শেষে বেঁচে গেছে ১৫৯ কোটি টাকা। এর মধ্যে ভারতের অনুদান ১২৬ কোটি টাকা। নিজেদের স্বার্থের প্রকল্প শেষ হওয়ার পর বাংলাদেশকে দেওয়া এ অনুদানের টাকা এখন ফেরত নিচ্ছে ভারত।

বাংলাদেশের ব্রাক্ষণবাড়িয়া থেকে আগরতলা পর্যন্ত রেলপথে যোগাযোগ বাড়াতে ট্রানজিট হিসেবে বেছে নেওয়া হয় বাংলাদেশকে। ভারতের স্বার্থে বাংলাদেশের বুক চিরে তৈরি হয় আখাউড়া-আগরতলা ডুয়েলগেজ রেলপথ। প্রকল্পের কাজ এরই মধ্যে শেষ হয়েছে, কাজ শেষে বেঁচে গেছে ১৫৯ কোটি টাকা। এর মধ্যে ভারতের অনুদান ১২৬ কোটি টাকা। নিজেদের স্বার্থের প্রকল্প শেষ হওয়ার পর বাংলাদেশকে দেওয়া এ অনুদানের টাকা এখন ফেরত নিচ্ছে ভারত।

 

প্রকল্পের বেশির ভাগ কাজ শেষে ২০২৩ সালের ১ নভেম্বর দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী ভার্চুয়ালি রেলপথটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনও করেন। যদিও রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর এখন পর্যন্ত এ রেলপথের কোনো কার্যক্রম শুরু হয়নি।

 

ভারতের উত্তরাঞ্চলের সঙ্গে পূর্বাঞ্চলের ৪০০ কিলোমিটারের সহজ পথে রেলপথের জন্য এ প্রকল্পটি হাতে নেয় বাংলাদেশ রেলওয়ে। ২০১৬ সালের জুলাইয়ে শুরু হওয়া প্রকল্পটির ব্যয় ধরা হয় ৪৭৭ কোটি ৮১ লাখ টাকা। এ ব্যয়ের মাত্র ৫৭ কোটি টাকা বাংলাদেশ সরকারের, বাকি ৪২০ কোটি টাকা ভারত সরকারের লাইন অব ক্রেডিট থেকে পাওয়া (এলওসি) অনুদান। প্রকল্পটির অবকাঠামোসহ সব ধরনের কাজ শেষ হয় গত বছরের জুনে। বেঁচে যায় ১৫৯ কোটি টাকা। এর মধ্যে ভারতের অনুদান বাঁচে ১২৬ কোটি টাকার বেশি।

 

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, যেহেতু এ অর্থ বাংলাদেশকে দেওয়া অনুদান। বাংলাদেশ ভারতের কাছে বেঁচে যাওয়া ১২৬ কোটি টাকা অন্য কোনো প্রকল্পে কাজে লাগাতে অনুমতি চেয়েছিল। কিন্তু ভারত তাতে রাজি হয়নি।

 

প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানান, ২০১৮ সালের জুলাইয়ে আখাউড়ার গঙ্গাসাগর থেকে আগরতলার নিশ্চিন্তপুর পর্যন্ত ১২ দশমিক ২৪ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের আখাউড়া-আগরতলা রেলপথ নির্মাণকাজ শুরু হয়। এই রেলপথের বাংলাদেশ অংশে রয়েছে ৬ দশমিক ৭৮ কিলোমিটার। করোনা মহামারিসহ বিভিন্ন কারণে দেড় বছর মেয়াদি প্রকল্পের কাজ শেষ করতে সময় লেগেছে ছয় বছরেরও বেশি।

 

ব্যয় সমন্বয় করতে প্রকল্পটির প্রথম সংশোধনী পাঠানো হয়েছে পরিকল্পনা কমিশনে। ১২ জানুয়ারি এর ওপর প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির সভাও হয়েছে। সভা সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

 

পিইসি সভায় উপস্থিত থাকা পরিকল্পনা কমিশনের একজন কর্মকর্তা আমার দেশকে জানিয়েছেন, এ প্রকল্পটি বাংলাদেশের কোনো কাজেই আসবে না। এটি সম্পূর্ণ ভারতের স্বার্থে তৈরি হয়েছে। তবে অনুদানের অর্থ অন্য কাজে ব্যয় করার জন্য ভারত কোনো সায় দেয়নি। তারা বেঁচে যাওয়া অর্থ ফেরত নিচ্ছে।

 

 

সাধারণত ৫০ কোটি টাকার ঊর্ধ্বে যে কোনো প্রকল্পে সম্ভাব্যতা যাচাই করা প্রয়োজন হয়। এ প্রকল্পেও করা হয়েছিল। তবে ভারতীয় প্রতিষ্ঠান নিজেদের অর্থায়নে প্রকল্পটির সম্ভাব্যতা যাচাই করেছিল। সঠিক সম্ভাব্যতা যাচাই না হওয়ায় প্রকল্পের প্রাক্কলিত ব্যয়ের ৩৩ শতাংশই ব্যয় হয়নি।

 

ব্যয় সমন্বয়ের বিষয়গুলোতে দেখা যায়, মূল প্রকল্প প্রস্তাবে (ডিপিপি) মেইন ও লুপ লাইনসহ রেলপথের দৈর্ঘ্য ছিল ১৪ কিলোমিটারের বেশি। কিন্তু মেইন ও লুপ লাইনসহ ৮ দশমিক ৯১ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণের প্রয়োজন হয়। এ খাতে বেঁচেছে প্রায় ৪৫ কোটি টাকা।

 

মূল ডিপিপিতে তিনটি মেজর ব্রিজ নির্মাণের সংস্থান ছিল। বাস্তব অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে মেজর ব্রিজ নির্মাণ করার প্রয়োজন হয়নি বিধায় এক্ষেত্রে ১৩ কোটি টাকা ব্যয় কমেছে।

 

গঙ্গাসাগর ইয়ার্ডে লাকসাম-আখাউড়া প্রকল্পে সিগন্যালিং কাজ করা হয়েছে। তাই এ প্রকল্পের আওতায় সিগন্যালিংয়ের কাজ প্রয়োজন হয়নি। এ খাতে বেঁচেছে ২৪ কোটি ৬৫ লাখ টাকা। সেতু এবং সিগন্যালিংয়ের কাজে যেহেতু হয়নি তাই কাস্টমস ডিউটি ও ভ্যাটেরও প্রয়োজন হয়নি। এক্ষেত্রে সিডি-ভ্যাটের বরাদ্দ পাওয়া ২৪ কোটি টাকা বেঁচে গেছে।

 

এ প্রকল্পটির বাংলাদেশ অংশের নির্মাণকাজ করেছে ভারতীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান টেক্সমেকো রেল অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড। করোনা মহামারিসহ নানা সংকটে দেড় বছরের এ প্রকল্পের কাজ শেষ করতে সময় লেগেছে ৬ বছরেরও বেশি।

 

রেলপথ পুরোপুরি প্রস্তুত থাকায় কয়েক দফার ট্রায়াল রান শেষে ২০২৩ সালের ১ নভেম্বর ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আখাউড়া-আগরতলা রেলপথের উদ্বোধন করেছিলেন বাংলাদেশের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তবে যখন উদ্বোধন করা হয় তখনও পুরোপুরি শেষ হয়নি ইমিগ্রেশন ও কাস্টমস ভবন, প্ল্যাটফর্ম এবং সংযোগ সড়কের নির্মাণকাজ।

 

২০২৩ সালের ৩১ অক্টোবর আখাউড়া-আগরতলা রেলপথ দিয়ে পণ্য আমদানি-রপ্তানির অনুমতি দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এ রেলপথ দিয়ে বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা ভারত থেকে অর্ধশতাধিক পণ্য আমদানি এবং সব ধরনের পণ্য রপ্তানি করতে পারবেন জানিয়েছেন প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © দৈনিক সত্যের কণ্ঠ- ২০২৫