কক্সবাজারের চকরিয়ায় প্যারাবনে নিয়ে এক কিশোরীকে (১৫) সংঘবদ্ধ দুর্বৃত্তদের গণধর্ষণের ঘটনায় জড়িত সন্দেহে সাতজনকে আটক করেছে পুলিশ । সোমবার পুলিশ উপজেলার উপকূলীয় বদরখালী ইউনিয়নের বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করে। মঙ্গলবার বিকেলে চকরিয়া থানা পুলিশের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।

আটকরা সবাই একই ইউনিয়নের বাসিন্দা। তারা হলেন বদরখালী ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের ঢেমুশিয়া পাড়া এলাকার আবদুস সোবহানের ছেলে মো. শাহজাহান (২৮), ৩ নম্বর ওয়ার্ডের টুটিয়াখালী পাড়া এলাকার ইজ্জত আলীর ছেলে মো. বশির (৪৫), একই ওয়ার্ডের দাতিনাখালী এলাকার আবু ছালেহ এর ছেলে অমিত হাসান (২৫), ৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাজার পাড়া এলাকার জিয়াবুল করিমের ছেলে তাজুল ইসলাম (১৮), একই এলাকার নুরুল আবসারের ছেলে সজীব (২৫), একই ওয়ার্ডের বশির আহামদের ছেলে ছোটন প্রকাশ চোরা ছোটন (২৫) এবং একই ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কলেজ পাড়া এলাকার মো. ইছহাকের ছেলে মো. কাজল (২৩)।

ধর্ষণের শিকার কিশোরীকে কক্সবাজার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান–স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) ভর্তি করা হয়েছে। কিশোরীর শারীরিক অবস্থা বর্তমানে কিছুটা উন্নতির দিকে বলে জানায় স্বজনরা।

চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মঞ্জুর কাদের ভুঁইয়া বলেন, সাঁড়াশি অভিযান চালিয়ে কিশোরী ধর্ষণের ঘটনায় জড়িত সন্দেহে সাতজনকে আটক করা হয়েছে। তাদেরকে পুলিশি হেফাজতে রেখে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতের কাছে আবেদন করা হবে। এ ঘটনার সাথে যারাই জড়িত, তাদেরকে আইনের আওতায় আনা হবে।

ওসি আরও বলেন, এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। মামলার পর আটকদের গ্রেপ্তার দেখানো হবে। পাশাপাশি ২২ ধারায় জবানবন্দি রেকর্ড করতে কিশোরীকে আদালতে নেয়া হবে।

প্রসঙ্গত: গত রবিবার রাতে চট্টগ্রামের বাঁশখালীর বোনের বাড়ি থেকে সিএনজি অটোরিকশা যোগে মহেশখালীস্থ নিজ বাড়িতে ফিরেছিলেন ওই কিশোরী। রাত সাড়ে ১০টার দিকে পথে গাড়ি নষ্ট হওয়ার কথা বলে বদরখালী সেতুর ওপর কিশোরীকে নামিয়ে দেয় অটোরিকশা চালক। তারপর পায়ে হেঁটে সেতু পার হওয়ার সময় সেতুর পূর্বপার্শ্বে দু’যুবক কিশোরীর গতিরোধ করে। পরে তাদের সাথে আরো আরেকজন যুবক সেতুর উপর জড়ো হয়। এ সময় তারা ছুরি ধরে ভয় দেখিয়ে কিশোরীর মুখ চেপে ধরে বেড়িবাঁধের পার্শ্ববর্তী প্যারাবনের ভেতরে নিয়ে যায়। সেখানে সাত থেকে আটজন মিলে তাকে ধর্ষণ করে। এ সময় জ্ঞান হারিয়ে ফেলে ওই কিশোরী। পরে তার জ্ঞান ফিরলে প্যারাবন থেকে হামাগুড়ি দিয়ে পাশের সড়কে উঠে চিৎকার দিয়ে লোক জড়ো করে। তার শোরচিৎকারে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এসে কিশোরীকে উদ্ধার করে প্রথমে বদরখালী বাজারের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানে চিকিৎসাধীন কিশোরীর অবস্থার অবনতি ঘটলে রাত ১টার দিকে চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। ধর্ষণের শিকার কিশোরী বর্তমানে কক্সবাজার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান–স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) চিকিৎসাধীন রয়েছেন।