ঢাকায় গার্মেন্টেসে চাকরি করতো পপি আক্তার (২০)। সেখানেই পরিচয় রিমন মোল্লা নামের আরেক গার্মেন্টসকর্মীর সাথে। প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে তাদের বিয়ে হয়। কিন্তু বিয়ের ৪-৫ মাস হলেও শ্বশুর বাড়িতে আসা হয়নি পপির। কিন্তু যখন নববধূ হয়ে আসলো, তখন এই আসাই শেষ আসা হলো তার জীবনে।
বুধবার দুপুরে পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলার চরমোন্তাজ ইউনিয়নের চরমার্গারেট গ্রামে অবস্থিত পপির শ্বশুর বাড়ি থেকে তার ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ। তার এই মৃত্যু ধুম্ব্রজাল সৃষ্টি হয়েছে। পপির পরিবারের দাবি, পপির মৃত্যুর জন্য দায়ী তার স্বামী ও শ্বশুর বাড়ির লোক। এদিকে, পপির মৃত্যুর ঘটনায় সম্পৃক্ত থাকা সন্দেহে স্বামী রিমন মোল্লা (২৮) ও শ্বাশুড়ি শিল্পী আক্তারকে (৪২) আটক করেছে পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গলাচিপা উপজেলার ডাকুয়া ইউনিয়নের পূর্ব আটখালী গ্রামের নাসির খানের মেয়ে পপি আক্তার এবং রাঙ্গাবালী উপজেলার চরমোন্তাজ ইউনিয়নের চরমার্গারেট গ্রামের মিলন মোল্লার ছেলে রিমন ঢাকায় গার্মেন্টেসে চাকরি করতো। সেখান থেকেই দু’জনের পরিচয়-আলাপ। একপর্যায় জড়ায় সম্পর্কে। ৪-৫ মাস আগে একসঙ্গে ঘুরতে গিয়ে লোকজনের তোপের মুখে তাদের বিয়ে হয়। কিন্তু এই বিয়ে মন থেকে মেনে নিতে পারেনি রিমন। তাই পপির সঙ্গে কিছুদিন একসঙ্গে থেকে বাড়িতে চলে আসে রিমন। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করার চেষ্টা করে।
অবশেষে পপি তিনদিন আগে ঢাকা থেকে বাবার বাড়ি আসে। সেখান থেকে পপি এসে ওঠে শ্বশুর বাড়িতে। কিন্তু স্বামী এবং শ্বাশুড়ি পপিকে গ্রহণ করবে না বলে বাড়ি থেকে বের হয়ে যায়। ঘটনার দিন মঙ্গলবার রাতে স্বামী ও শ্বাশুড়ি বাড়িতে ফিরে এসে পপির সাথে কথা কাটাকাটি হয়। এই সময় পপির বাবার সাথেও তাদের ঝগড়া হয়। পরে বুধবার সকালে ওই বাড়ি থেকে পপির গলায় ফাঁস দেওয়া ঝুলন্ত মরদেহ পাওয়া যায়।
পপির বাবা নাসির খান বলেন, ‘ছেলে-মেয়ে একজন আরেকজনকে পছন্দ করতো। ৫ মাস আগে তাদের বিয়ে হয়। দাদি শ্বাশুড়ি অসুস্থতার খবর শুনে আমার মেয়ে প্রথম শ্বশুর বাড়িতে যায় রোববার। আমার মেয়ে গেলেই তারা মারধর করে। এখবর পেয়ে আমি মঙ্গলবার গেলে রাতে আমার সামনেও মারধর করে। আমাকেও মরধর করতে চায়। পরে আমি আরেক বাড়িতে গিয়ে রাতে ছিলাম। এই সময় আমার মেয়েকে মেরে (হত্যা) ঝুঁলাইয়া রাখছে তারা।’
এ ব্যাপারে রাঙ্গাবালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরুল ইসলাম মজুমদার বলেন, ‘পপির বাবার দাবি মেয়েকে তার সামনেই মারধর করছে। এ ঘটনায় স্বামী-শ্বাশুড়িকে আটক করা হয়েছে। পপির ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এখন মামলা প্রক্রিয়াধীন।’ তিনি আরও বলেন, ‘কিভাবে মৃত্যু হয়েছে তা জানার জন্য লাশ ময়নাতদন্তের জন্য পটুয়াখালী মর্গে পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট পেলে বিস্তারিত বলা যাবে।’