ভোলা সদর উপজেলার পূর্ব ইলিশা ইউনিয়নের দালাল বাজার সংলগ্ন ভাংতির খালের মেঘনা নদীর তীরে বালুভর্তি জিও ব্যাগ ডাম্পিং করে বেড়ীবাঁধ রক্ষা প্রকল্পে মেঘনার তীর ঘেঁষে বাস্তবায়ন হচ্ছে ১ কোটি ৭৩ লাখ টাকা ব্যয়ে ৪০০ মিটারের বেড়ীবাঁধ রক্ষা প্রকল্প । উক্ত বেড়ীবাঁধ রক্ষা প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবেন চট্যগ্রামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান, তাদের চলতি জুন মাসের মধ্যেই কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে ।
গত শনিবার দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, প্রতি বছর মেঘনার ভাঙনে ভোলা সদর উপজেলার ৫টি ইউনিয়নে ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে । ভাঙনে অনেক মানুষ বাড়িঘর হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন । নদী ভাঙ্গনে বিলীন হয়ে গেছে উপজেলার কয়েকটি গ্রামের মানচিত্র । ভাঙন রোধে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড প্রতি বছর মেঘনা নদীর তীর সংরক্ষণ প্রকল্পের নকশা তৈরি করে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠায় । বার্ষিক জরুরি ভাঙনরোধ প্রকল্পের আওতায় ভোলার মেঘনা নদীর জরুরি ভাঙন রোধে পূর্ব ইলিশার ২নং ওয়ার্ডের দালাল বাজার সংলগ্ন ভাংতির খাল এলাকায় পানি উন্নয়ন বোর্ড জিও ব্যাগ দিয়ে ৪০০ মিটার নদীতীরে বেড়ীবাঁধ সংরক্ষণের জন্য চট্টগ্রামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান, মেসার্স গরীবে নেওয়াজ এন্টারপ্রাইজের প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে প্রায় ১ কোটি ৭৩ লাখ টাকার চুক্তি করে । চুক্তি অনুযায়ী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ৪২ হাজার ৩০০ জিও ব্যাগে ২৫০ কেজি লোকাল বালি ফেলে ডাম্পিং করার কথা, এখন চলছে জিও ব্যাগে বালু ভরার কাজ । ৩০ জুনের মধ্যে কাজ শেষ করতে হবে । তাই কাজটি মূল ঠিকাদারের কাছ থেকে চুক্তিতে নিয়েছেন ভোলার ঠিকাদার ইকবাল হোসেন ।
তবে স্থানীয় ঠিকাদার দ্বারা প্রকল্পটির কাজ চলমান থাকায় কাজের মান নিয়ে এলাকাবাসী শঙ্কিত থাকলেও, ভোলাপাউবো’র তত্ত্বাবধানে কোন প্রকার অনিয়ম ছাড়াই প্রকল্পটি বাস্তবায়নের পথে । তাই নদী ভাঙ্গন কবলিত এলাকার মানুষ খুশি ।
ভোলা প ও র বিভাগ- ১পাউবো, ভোলা এর নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ হাসানুজ্জামান এর উপস্থিতিতে এলাকাবাসীকে জিও ব্যাগের বালি এবং ওজন দেখিয়ে তাদের শঙ্কা দূর করছেন ।
এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান জানান- এই বেড়ীবাঁধ নির্মাণ প্রকল্পটি আমরা জুন মাসের মধ্যেই শেষ করব । কাজের মান নিয়ে প্রশ্ন করলে তারা বলে, আমরা সিডিউল অনুযায়ী কাজ করছি । কোন প্রকার অনিয়ম ছাড়াই ৪২৬১৫ টি জিও ব্যাগে ২৫০ কেজি করে লোকাল বালু দিয়ে সেলাই করছি ।
এলাকাবাসী জানায়- ভোলা পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে প্রতিদিন কর্মকর্তারা এসে কাজটির সঠিকভাবে হচ্ছে কিনা তা তদারকি করেন । তাইপাউবো’র হস্তক্ষেপে আমরা আশা করি কাজটি সুন্দরভাবে সম্পন্ন হবে । এবং আমাদের দালাল বাজার ভাংতির খাল এলাকাটি নদী ভাঙ্গন থেকে রক্ষা পাবে ।
স্থানীয় ঠিকাদার ইকবাল হোসেন বলেন কাজের কোনো সমস্যা নেই । ঠিকমতো হচ্ছে । তাছাড়া পানি উন্নয়ন বোর্ড আমাদের কাজে সার্বক্ষণিকভাবে মনিটরিং করছে ।
এদিকে জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ হাসানুজ্জামান, আজকের দর্পণ কে বলেন, দালাল বাজার সংলগ্ন কাজ নিয়ে এলাকাবাসীর শঙ্কার কোনো কারণ দেখছি না, এবং কোনো অনিয়ম করার সুযোগ নেই । যে অভিযোগগুলো উঠেছে তা সঠিক নয় । আমরা শত ভাগ কাজ বুঝে ডাম্পিং করি । তাছাড়া ঢাকা থেকে টাস্কফোর্স সদস্যরা এসে কাজের দেখভাল করছেন ।
সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে করে তিনি আরো বলেন, আবার যখন টাস্কফোর্স সদস্যরা আসবেন তখন আপনাদেরকে ফোন করে কাজের তদারকি দেখার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হবে ।