নড়াইল সদর উপজেলার বিছালী ইউনিয়নের রুখালী গ্রামের মশিয়ার রহমান বিশ্বাস সহ মির্জাপুরের কিছু অসাধু ব্যাবসায়ী চিংড়িতে জেলি পুশ করছে, এটা অশনিসংকেত। ওজন বাড়ানোর জন্য সিরিঞ্জ দিয়ে চিংড়িতে জেলিসহ বিভিন্ন অপদ্রব্য পুশ করেন। জেলিযুক্ত চিংড়ি মাছে ক্রেতারা তিনভাবে প্রতারিত হচ্ছেন। প্রথমত, ওজন প্রতারণা; দ্বিতীয়ত, দাম বেশি ও তৃতীয়ত, মাছের গুণগত মান নিয়ে প্রতারিত হচ্ছেন। এতে স্বাস্থ্যঝুঁকি রয়েছে। এ ছাড়া ভেজাল চিংড়ি রপ্তানি হলে দেশের সুনাম নষ্ট হওয়ার সঙ্গে ঝুঁকিতে পড়বে প্রতিযোগিতাপূর্ণ আন্তর্জাতিক বাজারে টিকে থাকার সুযোগ।
জেলার সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় বেশ সক্রিয় চিংড়িতে অপদ্রব্য পুশ করা অসাধু ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট। প্রশাসনের নজর এড়িয়ে দীর্ঘদিন ধরে তারা এই অবৈধ কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সিরিঞ্জ ও সুঁচের মাধ্যমে রপ্তানিযোগ্য চিংড়িতে জেলি, সাগুদানা, ফিটকির’র মিশ্রণ, পানিতে ভেজানো চিড়া ও ভাতের মাড়ের মিশ্রণ ইনজেক্ট করে চিংড়ির ওজন ও সাইজ বৃদ্ধি করা হচ্ছে।
খুচরা ক্রেতারা স্থানীয় ঘের ও আড়ত থেকে চিংড়ি কিনে বাড়িতে নিয়ে ব্যাবসায়ীরা সবাই মিলে তাতে অপদ্রব্য পুশ করছে। পরে গ্রেড অনুসারে পুশকৃত ওই চিংড়ি চড়া দামে রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানে বিক্রি করে অর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী। ফলে শুধু বিশ্ববাজারে নয়, দেশের বাজারেও প্রতিনিয়ত প্রতারিত হচ্ছেন ভোক্তারা।
আমরা খাওয়ার জন্য বেঁচে থাকি না, বাঁচার জন্য খাই। খাবারের নিরাপত্তাটুকুও যদি না পাই তাহলে কীভাবে বাঁচি! বিদ্যমান মৎস্য পরিদর্শন ও মান নিয়ন্ত্রণ আইন-২০২০ অনুযায়ী চিংড়িতে অপদ্রব্য পুশ করার প্রমাণ পাওয়া গেলে দুই বছরের কারাদণ্ড ও সর্বোচ্চ আট লাখ টাকা জরিমানার বিধান আছে। তারপর অতিরিক্ত লাভের আশায় কিছু অসাধু ব্যাবসায়ী প্রতিনিয়ত চিংড়িতে ক্ষতিকর জেলি পুশ করে চলেছে।
বিছালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ হিমায়েত হুসাইন ফারুক বলেন অসাধু কিছু ব্যাবসায়ীর চিংড়িতে ক্ষতিকর জেলি পুশ কোন ভাবে ঠেকানো যাচ্ছে না তাই তিনি চিংড়িতে অপদ্রব্য পুশ বন্ধে ওই এলাকাগুলোতে অভিযান পরিচালনা করে অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
এ বিষয়ে নড়াইল জেলা মৎস্য কর্মকর্তা এইস এম বদরুজ্জামান সাংবাদিকদের বলেন চিংড়িতে ক্ষতিকর জেলি পুশ করা জঘণ্য অপরাধ, এমন অপরাধ কোন ভাবে মেনে নিবো না, অবশ্যই যে সকল ব্যাবসায়ীরা এই অপরাধের সাথে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা নেওয়া হবে।