জয়পুরহাটে কানিস ফাতেমা (৩২) নামে এক গৃহবধুর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
সোমাবর (২৭নভেম্বর) জয়পুরহাট পৌর এলাকার হারাইল মুসলিম নগর ভাড়া বাসা এলাকা থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ঘটনার পর থেকেই স্বামী পলাতক।
নিহত কানিস রাবেয়া গাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার সীচা গ্রামের সফিউল ইসলামের স্ত্রী ও একই উপজেলার মকরম প্রতাপ গ্রামের হাবিবুর রহমানের মেয়ে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জয়পুরহাট সদর থানার উপ-পরিদর্শক নাজমুল হাসান।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, প্রায় এক বছর ধরে জয়পুরহাট পৌর শহরের হারাইল মুসলিম নগর এলাকায় ডা: খন্দকার মিজানুর রহমানের দ্বিতীয় তলায় ভাড়া থাকতেন ওই দম্পতি। আজ সোমবার বেলা ১২টার দিকে নিহত কানিস রাবেয়ার পিতা হাবিবুর রহমান ফোন দিয়ে মেয়েকে না পেয়ে বাড়ির মালিকের স্ত্রী মাহবুবাকে ফোন দেয়। এসময় মাহবুবা বাড়ির বাহিরে নিজ কর্মস্থলে ছিলেন। দুপুরে বাসায় ফিরে কানিসের রুমে ডাক দিয়ে সাড়া মেলেনি। এক পর্যায়ে দরজাতে চাপ দিলে ভিতরে আটকানো না থাকায় দরজা খুলে যায়। এরপর বাসার ভিতরে ঢুকে দেখতে পায় কানিস ফ্যানের সাথে ঝুলিয়ে আছে আর তার স্বামী বাসায় নাই। খবর পেয়ে পুলিশ এসে ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে জয়পুরহাট জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়ে দেয়।
বাড়ির মালিকের স্ত্রী মাহবুবা সুলতানা বলেন, প্রায় এক বছর ধরে ওই দম্পতি তাদের বাসায় ভাড়া আছে। ভাড়া উঠার পর থেকেই স্বামীর মধ্যে কলহ বিবাদ লেগেই থাকে। কিছুদিন পর জানতে পারেন সফিউল ইসলামের আগের স্ত্রী ও সন্তান আছে। আর তার স্ত্রী কানিস রাবেয়ারও আগে বিয়ে হয়েছিল সেখানে তার সন্তানও রয়েছে। তারা দুজনে আগে ব্র্যাক অফিসে চাকুরি করতো। সেখান থেকেই সম্পর্কে তাদের দুজনেরই দ্বিতীয় বিয়ে। এ নিয়ে প্রায়ই স্বামী স্ত্রীর মধ্যে কলোহ লেগেই থাকতো। আমি একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে চাকুরি করি। আজ বেলা ১২টার দিকে কর্মস্থলে থাকা কালীন কানিস রাবেয়ার বাড়ি থেকে তার বাবা ফোন করে জানায় কানিসকে ফোন দিয়ে পাওয়া যাচ্ছেনা। দুপুরে বাসায় ফিরে কানিসের দরজার সামনে গিয়ে ডাক দিয়েও কোন সাড়া মেলেনি। এরপর একটু জোরে দরজায় চাপ দিলে দরজা খুলে যায়। ভিতর থেকে দরজা আটকানো ছিলনা। পরে ভিতরে গিয়ে দেখতে পায় ঘরের ভিতর খাটের উপরে ফ্যানের সাথে কানিসের মরদেহ ঝুলে আছে। আর তার স্বামীকে পাওয়া যায়নি। আমি এমন দৃশ্য দেখে চিৎকার দিয়ে দৌড় দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে মরদেহ উদ্ধার করে হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছেন। নিহতের বাড়িতে খবর দেওয়া হয়েছে।
জয়পুরহাট সদর থানার উপ-পরিদশর্ক নাজমুল হাসান বলেন, পৌর এলাকার বাস টার্মিনাল সংলগ্ন হারাইল মুসলিম নগর এলাকায় গাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার সফিউল ইসলাম জয়পুরহাটে স্কয়ার কোম্পানিতে টেরিটোরি অফিসার পদে চাকুরি করে। সে সুবাধে সফিউল তার দ্বিতীয় স্ত্রী কানিস রাবেয়াকে নিয়ে প্রায় এক বছর ধরে ডা: মিজানুর খন্দকারের দ্বিতীয় তলায় ভাড়া বাসায় থাকেতন। আজ সোমবার দুপুরে খবর পেয়ে ওই ভাড়া বাসা থেকে গৃহবধুর মরদেহ উদ্ধার করে হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়না তদন্ত শেষে জানা যাবে মৃত্যুর কারণ।
ঘটনার পর থেকেই স্বামী মোবাইল ফোন বন্ধ করে আত্নগোপন করেছে। এ ঘটনায় এখনো কোন মামলা হয়নি।