Dainik Sotter Kontho - দৈনিক সত্যের কণ্ঠ
ঢাকাTuesday , 26 September 2023
  • অন্যান্য
আজকের সর্বশেষ সবখবর

গ্রামবাসীর ৭ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা কাটের ব্রীজ পানিতে ভেসে গেলো

নীলফামারী প্রতিনিধি
September 26, 2023 2:45 am । ১৪৬ জন

Google News

নীলফামারীর জলঢাকায় নদীর ওপর গ্রামবাসীর ৭ লাখ টাকায় নির্মান করা দৃষ্টি নন্দন কাঠের সেতু পানিতে ভেসে গেলো।।

রবিবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা ও জানাযায় গত ৫ দিনের টানা বৃষ্টির কারনে উপজেলার শিমুলবাড়ী ইউনিয়নের ঘুঘুমারী এলাকার

চাড়ালকাটা নদীর উপর ৭ লাখ টাকা ব্যায়ে নির্মিত সেতুটি নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ভেঙে যায়। আর এই ব্রীজটি দুই পাড়ের মানুষের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন ভেঙে যাওয়ায় চলাচলে দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন।

জানাযায়, উপজেলার

পশ্চিমাঞ্চলের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া  চাড়ালকাটা নদী।

এ নদী জেলা থেকে বিভক্ত করেছে সদর উপজেলার রামনগর, ও জলঢাকা উপজেলার শিমুলবাড়ি এবং খুটামারা ইউনিয়ন। ফলে শুস্ক মৌসুমে

হাঁটুপানি আবার বর্ষা মৌসুমে

নৌকায় পারাপার হয় তিন ইউনিয়নের প্রায় ৪০ হাজার বাসিন্দাকে। বার বার একটি সেতুর দাবি জানালেও দীর্ঘ ৫০ বছরেও নির্মাণ হয়নি এই সেতু।

তাই গ্রামবাসী নিজেদের উদ্যোগে ৭ লাখ টাকা ব্যয়ে নদীর ওপর এই সেতু নির্মাণ করেছেন মাস খানিক আগে।

উল্লেখ যে, স্থানীয় সামাজিক সংগঠন ঘুঘুমারী সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার উদ্যোগ নিয়ে এলাকাবাসীর কাছ থেকে ৭ লাখ টাকার সহযোগিতায় রড সিমেন্টের পিলার ও কাঠ দিয়ে বানানো হয় দৃষ্টি নন্দন সেতু।

৫৩টি খুঁটির ওপর দাঁড়ানো লাল সাদা সবুজ রঙ আকর্ষণীয় করে তুলেছে নাওঘাট এলাকার সেতুটিকে। বর্তমানে  কাঠের সেতুটি দেখতে সেখানে ভিড় জমাচ্ছেন বিভিন্ন এলাকার মানুষ।

বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়,

চারালকাটা নদীর ঘুঘুমারী নাওঘাটে ১৯৭১ সালে একটি বাঁশের সাঁকো ছিল। সে সময়ের  বন্যায় বাঁশের সাঁকোটি ভেঙে গেলে স্বাধীনতার ৫০ বছরেরও সেখানে নির্মাণ হয়নি কোন সাঁকো। এতে রামনগর, শিমুলবাড়ি ও খুটামারা ইউনিয়ন সহ বেশ কয়েকটি গ্রাম থেকে গ্রামবাসী সহ সকল পেশার মানুষকেজেলা সদর সহ বিভিন্ন স্থানে যেতে হতো প্রায় ৩০ কিলোমিটার পথ ঘুরে  । ঘুরে না গেলে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পার হতো নদী।ফলে যাতায়াতে পোহাতে হতো চরম দুর্ভোগ।

কেউ অসুস্থ হলে দ্রুত হাসপাতালে নেওয়ার ছিল না কোনো ব্যবস্থা।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, নীলফামারী-৩ আসনের সংসদ সদস্য প্রার্থীরা নির্বাচনের সময় ঘুঘুমারী নাওঘাটে ব্রিজ নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিলেও নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার পর মনে রাখেননি কেউ। তাই সরকার আসে সরকার যায় ব্রীজ আর হয় না।কবে যে হবে তা জানিনা। এদিকে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ সেখানে একাধিকবার ব্রিজ নির্মাণের জন্য মাপ নিলেও ব্রীজ হবে হবে করে আর হয় না।

বর্তমান সংসদ সদস্য মেজর রানা মোহাম্মদ সোহেল (অব.) বাঁশের সাঁকো নির্মাণের জন্য বরাদ্দ দিলেও তা ছিল খুব কম।

ঘুঘুমারী এলাকার মমিনুর রশীদ(৬৫) এ প্রতিবেদক কে বলেন, ৭১ সালে এখানে একটা কাঠের সেতু ছিল। ওটা ভেঙে যাওয়ার পর আর হয়নি। এখন এলাকাবাসী টাকা  সহ বিভিন্ন ভাবে সহযোগিতা করে এই কাঠের সেতু বানাইছে। এখন আমাদের দুই এলাকার মানুষ যাতায়াত করতে পারছি। আমরা অনেক খুশি। আমাদের সে খুশিকে বেশীদিন ধরে রাখতে পারলাম না।এই বৃষ্টি আমাদের স্বপ্নের সেতুটি ভেঙে দিল।

শিক্ষক আব্দুল কাইউম বলেন, এখানে সেতু না থাকায় আমরা নদী পাড় হতে খুব সমস্যায় পড়তাম,ব্যবসা বাণিজ্য সহ বিভিন্ন  কাজে করতে জেলা শহরে যেতে পারতাম না। পরতে হতো চরম দূর্ভোগে। পড়াশোনার জন্য যেতে হতো ৩০ কিলোমিটার পথ ঘুরে। কাঠের সেতুটা হওয়ার কারণে আমরা সহজে পার হতে পারছি। তবে কয়েকদিনের টানা বৃষ্টির কারনে  সেতুটি ভেঙে যাওয়ায় আমাদের স্বপ্ন ভেঙে গেছে। তাই এখানে একটা স্থায়ী সেতু নির্মাণের  দাবি জানাচ্ছি।

আরিফুল ইসলাম  বলেন, এখানে সেতু লাগবে, এটাই আমাদের দাবী। সরকারের নির্দেশনা আছে গ্রামকে শহরে রূপান্তর করার। কিন্তু এমন ভোগান্তিতে কীভাবে গ্রাম শহরে রূপান্তর হবে। এ চারালকাটা নদীতে সেতু হলে এলাকার মানুষ উপকৃত হবো। এ এলাকাকে ডিজিটাল হিসেবে ঘোষণা করতে পারবো। দেশ ডিজিটাল থেকে স্মার্ট হচ্ছে। কিন্তু স্মার্টের পরিচয় টা কী পেলাম আমরা। এখনো যদি কাঠের সেতু ব্যবহার করি তাহলে দেশ স্মার্ট কীভাবে হবে। আমরা এখানে একটা  ব্রিজ চাই।

উপজেলা প্রকৌশলী শিশির চন্দ্র রায় বলেন সরকারের নির্দেশনা পেলে আমরা ব্যাবস্থা নিব।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ময়নুল ইসলাম বলেন সেখানে ব্রীজ নির্মানের জন্য  স্থানীয়  সংসদ সদস্য সহ উর্ধতন কর্মকর্তাকে জানিয়েছি।তারা যে নির্দেশনা দিবেন আমরা সেই ভাবে কাজ করব।

এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক পঙ্কজ ঘোষ বলেন, আমরা চেষ্টা করছি

নীলফামারীবাসীর সুবিধার্থে  যেসব যায়গায় সেতু নির্মাণ বাকি আছে সেগুলোতে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ক্রমান্বয়ে সেতু ও সড়ক নির্মাণ করা হবে।