Dainik Sotter Kontho - দৈনিক সত্যের কণ্ঠ
ঢাকাSunday , 28 January 2024
  • অন্যান্য

কিশোরগঞ্জ ষ্টেশনে রেলের টিকেট এখন সোনার হরিণ

Google News

মোঃ জোনায়েদ হোসেন ,কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধিঃ

কিশোরগঞ্জ থেকে ঢাকা অভিমূখে আন্তঃনগর এগারসিন্দুর প্রভাতী/গোধুলি ও কিশোরগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেন চলাচল করে।কিশোরগঞ্জ থেকে প্রতিদিন ঢাকাগামী এগারো সিন্ধুর প্রভাতী-গোধুলী ও কিশোরগঞ্জ এক্সপ্রেস এর আসন সংখ্যা দুই হাজার সাতটি।

এছাড়াও প্রতিদিন চট্রগ্রামগামী দুটি ট্রেনের একশো সত্তরটি আসনের টিকিটের বরাদ্দ এ স্টেশনের যাত্রীদের জন্য। অতিরিক্ত স্টপেজ আর অত্যধিক যাত্রী উঠায় কারনে ট্রেন গুলো লোকাল ট্রেনে পরিণত হচ্ছে দিনদিন৷ বিশেষ করে নরসিংদী থেকে প্রতিদিনই বিপুল পরিমান যাত্রী ওঠে যা ট্রেনের ধারণ ক্ষমতার বাইরে। যার ফলে খুব কষ্ট করে দমবন্ধ হয়ে যাবার মত অবস্থায় যাতায়াত করে ট্রেণে ভ্রমণ করা কিশোরগঞ্জের যাত্রীরা। এর মধ্যে আবার মরার উপর খাড়া’র ঘায়ের মত রেলের টিকেট কাউন্টালে পাওয়া যায় না ৷ বেশি অধিক টিকেট কালো বাজারীদের হাতে চলে যাওয়ার যাত্রীরা অসহায় হয়ে পড়েছে।

কিশোরগঞ্জ স্টেশনে ৭ দিন আগে গিয়েও টিকিট পাওয়া যায়না এমন অভিযোগ স্থানীয় প্রশাসনকে দীর্ঘদিন যাবত করা হলেও কার্যকরী পদক্ষেপ না নেয়ার ফলে টিকেট কালোবাজারী সিন্ডিকেট এর দৌরাত্ম দিন দিন বেড়েই চলেছে। টিকেট কালোবাজারীতে রেল স্টেশনের কিছু অসাধু কর্মকর্তা এবং স্থানীয় কিছু টিকেট কালোবাজারি জড়িত বলে গোপনসূত্রে জানা যায় ৷

এছাড়াও সাধারনত টিকেট কালোবাজারী প্রতিটিকেটে ২০০/৩০০ টাকা বেশী নিয়ে টিকেট বিক্রি করে, ঈদ আসলে এর পরিমান আরো দ্বীগুণ বৃদ্ধি পায়৷ কালোবাজারীরা শোভন শ্রেণীর ১২৫ টাকার টিকেট ২৫০/৩৫০টাকা। শোভন চেয়ার ১৫০ টাকার টিকেট ৩৫০/৪০০টাকা, প্রথম শ্রেণীর ২০০ টাকার টিকেট ৪৫০/৫৫০ করে বিক্রি করছে। যাত্রীদের অভিযোগ,কাউন্টারে গিয়ে টিকেট পাওয়া যায় না। তাই অনেকটা বাধ্য হয়েই কাউন্টারে না গিয়ে কালোবাজারীদের কাছে থেকেই টিকেট কিনতে হচ্ছে। এ ছাড়া প্রচণ্ড যাত্রীর চাপে টয়লেটের সামনে ও ২ বগির সংযোগ স্থলে এবং খাবার বগিতে কম্পার্মেন্টের দায়িত্বে থাকা সেবকগণ টাকা নিয়ে মোড়া দিয়ে বিনা টিকেটের প্রচুর যাত্রী বসিয়ে নিয়ে যান। এছাড়া কিশোরগঞ্জ থেকে ঢাকার ১৩৫ কিলোমিটার পথ যেতে প্রায় ৪ থেকে ৫ ঘন্টা সময় নেয় ট্রেন।কোন কোন সময় ৫ঘন্টার বেশিও লেগে যায়।এগারসিন্ধুর ট্রেনের সার্ভিসের অবস্থাও দিনদিন খারাপ হচ্ছে বলে সাধারন যাত্রীদের মতামত। এছাড়াও যাত্রীদের অভিযোগ বাথরুমে থাকে না পানি,ময়লা পরিষ্কার করা হয় না,বাথরুমের পাশে যারা বসে তাদেরকে দুর্গন্ধের হাত থেকে বাঁচতে সারা পথ রুমাল দিয়ে মুখ ঢেকে রাখতে হয়৷ এমনকি বগিতে অনেক বাতি নষ্ট, ফ্যান গুলোও ঠিক মতে ঘুরে না৷

যাত্রীরা জানান ,স্টেশনের ভিতর ও বাহিরে অবস্থান করা কিছু চিহ্নিত কালোবাজারীর কাছ থেকে টিকেট কিনতে পাওয়া যায়৷এছাড়া স্থানীয় কয়েকজন টিকেট কালোবাজারির নামও শোনা যায় যাত্রীদের ত্রুখে৷ প্রায়শই এদেরকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী গ্রেফতার করে। কিন্তু কিছুদিন পর জামিনে বের হয়ে আবার তারা একই কাজে লিপ্ত হয় বলে টিকেট কালোবাজারী রোধ হচ্ছে না বলে মনে করেন ট্রেনে ভ্রমণ করা যাত্রীরা।

এ বিষয়ে স্টেশন মাস্টার মিজানুর রহমান সাথে কথা বললে তিনি জানান ,টিকেট কালোবাজারী রোধে আমরা সব সময় কাজ করে যাচ্ছি। বর্তমান সময়ে রেজিস্টেশন করা নাম্বারের অনূকূলে টিকেট বিক্রি করা হয়।যার ফলে টিকেট কালোবাজারী অনেকাংশে কমে গেছে বলে আমি মনে করি৷ তারপরেও আমরা সার্বক্ষণিক তদারকি করছি কেউ যেন টিকেট কালোবাজারী করতে না পারে। তাছাড়া টিকেট কালোবাজারীর সাথে জড়িত কাউকে পাওয়া গেলে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ ও রেলওয়ে পুলিশ তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেবে বলেও আশ্বস্থ করেন ষ্টেশন মাষ্টার ও রেলওয়ে থানার ওসি ৷৷