Dainik Sotter Kontho - দৈনিক সত্যের কণ্ঠ
ঢাকাMonday , 24 July 2023
  • অন্যান্য

“আল্লামা ইকবাল ছিলেন মুসলিম আত্মজাগরণের এক উজ্জ্বল পথিকৃৎ”-বক্তাগণ

Google News

চট্টগ্রাম মহানগরীর ধনিয়ালাপাড়াস্থ বায়তুশ শরফ ইসলামী গবেষণা প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগে এক সেমিনারের আয়োজন করা হয়।

 

শনিবার ২২ জুলাই) বিকাল ৫টায় গবেষণা প্রতিষ্ঠান মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত উক্ত সেমিনারের প্রবন্ধের বিষয় “মুসলিম মননে আল্লামা ইকবালের চিন্তা ও দর্শনের প্রভাব: প্রেক্ষিত একবিংশ শতাব্দী” ।

বায়তুশ শরফ ইসলামী গবেষণা প্রতিষ্ঠানের মহাপরিচালক এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবী বিভাগের অধ্যাপক প্রফেসর ড. আ.ক.ম আব্দুল কাদেরের সভাপতিত্বে সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন রাহবারে বায়তুশ শরফ আল্লামা শায়খ মুহাম্মদ আবদুল হাই নদভী (মা.জি.আ), পীর সাহেব বায়তুশ শরফ।

বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনুছ, আইআইইউসি’র প্রফেসর ড. বিএম মফিজুর রহমান আজহারী, বায়তুশ শরফ আদর্শ কামিল (অনার্স-মাস্টার্স) মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা আবু সালেহ মুহাম্মদ ছলীমুল্লাহ, অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ওয়ালি উল্লাহ মুঈন, মাসিক দ্বীন দুনিয়ার সম্পাদক মুহাম্মদ জাফর উল্লাহ, বায়তুশ শরফ আদর্শ কামিল মাদ্রাসার সাবেক কৃতিছাত্র মনিরুল ইসলাম ফারুক।

এসময় উক্ত সেমিনারে আরো উপস্থিত ছিলেন আনজুমনে ইত্তেহাদের সেক্রেটারি জেনারেল আলহাজ্ব হাফেজ মোহাম্মদ আমান উল্লাহ, সহ সভাপতি আলহাজ্ব মর্তুজা ছিদ্দিক সহ আনজুমনে ইত্তেহাদ, মজলিসুল ওলামা, আনজুমনে নওজোয়ানের বিভিন্ন স্তরের নেতৃবৃন্দ।

বক্তারা বলেন, ড. আল্লামা ইকবাল ছিলেন উপমহাদেশের মুক্তিকামী মানুষের আত্মজাগরণের পথিকৃৎ এক মহান কবি ও দার্শনিক। তাঁর সৃষ্টি, শিক্ষা, দৃষ্টি ও আদর্শের মধ্যে আমাদের জাতিসত্তার আত্মপরিচয়ের স্বভাব ও স্বরূপ অসামান্য উজ্জ্বলতায় উৎকীর্ণ। ফলে ইকবাল সত্তায় কেবল এক কবির বসবাস নয়, বরং রয়েছে এক মহান আদর্শের উত্তরাধিকার। তাঁর আবির্ভাব ছিল উপমহাদেশের ঘোরতর দুঃসময়ে ত্রাণকর্তার মতো। তার স্বতন্ত্র, দুঃসাহসী উচ্চারণ চুরমার করতে চেয়েছে পরাধীন মানুষের হীনম্মন্যতার দেয়াল।

ড. আল্লামা ইকবালকে উর্দু ও ফার্সি সাহিত্যে অন্যতম শ্রেষ্ঠ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। মুসলিম জাতির অধঃপতন তাঁকে পীড়া দিয়েছিল। কবিতা ও দর্শনের মাধ্যমে সেই অধোগতির কারণ বিশ্লেষণ ও সমাধানের নির্দেশনা দান করেন। জাতিকে আত্মকলহ, ক্ষুদ্র স্বার্থ ও বিভেদ ভুলে সাম্য, মৈত্রী ও বিশ্বভ্রাতৃত্বের পতাকাতলে সমবেত হবার আহবান জানান। ইকবাল ইসলামের শিক্ষাকে দেখেছেন বৈপ্লবিক দৃষ্টিকোণ থেকে। দেখিয়েছেন পশ্চিমা অভিজ্ঞতাবাদের সাথে ইসলামের বিরোধ নেই। তিনি প্রমাণ করে দেখিয়েছেন, কোরআন ইহজগৎ আর পরজগতের মধ্যে সমন্বয় সাধন করে মানবজীবনের সর্বোচ্চ মূল্যবোধসমূহের বাস্তব রূপায়ণের নির্দেশনা দেয়।

ইকবালের সেই চিন্তাধারা শুধু মুসলিম জাতিকেই উদ্বুদ্ধ করেনি; বিশ্বের প্রগতিশীল মানবমনকেও আন্দোলিত করেছে। আধুনিক মুসলিম বিশ্বে জ্ঞানবিজ্ঞান চর্চার যে উৎসাহ পরিলক্ষিত হচ্ছে, তাঁর যুগস্রষ্টা আল্লামা ইকবাল। আল্লামা ইকবালের লেখা পরবর্তী প্রজন্মের হৃদয়ে দিয়েছে বিপ্লবের শক্তি। বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চায় দিয়েছে নতুন মাত্রা। আফগানিস্তান, ইরান, তুরস্ক থেকে শুরু করে পৃথিবীর নানা প্রান্তে ইসলাম চিন্তকদের পুনরুজ্জীবনের প্রচেষ্টার পেছনে তাঁর কাব্য অনুপ্রেরণার মতো।